?#Tha_Hate_Story? ?#Madness_Love?,16,17

0
1602

?#Tha_Hate_Story?
?#Madness_Love?,16,17
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_16

সকালে,,,,

শবনম রেডি হয়ে নিচে নেমে দেখে সূর্য সিড়ির সামনেই দাঁড়িয়ে আছে ওর অপেক্ষায়। শবনমকে দেখে সূর্য ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। সূর্য সামনে আসতেই শবনম মুখ ঘুরিয়ে চলে যেতে নেয় তখনই সূর্য শবনমের হাত ধরে ফেলে।

সূর্যঃ শবনম আমার কথা টাতো শুনো। আমাকে এক্সপ্লেইন করার একটা সুযোগ দাও প্লিজ। ( অনুনয় স্বরে)

শবনম সূর্য থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে বলল,,,

শবনমঃ আমি তোমার কোন কথা শুনতে চাই না সূর্য। কাল তুমি যা করেছো তার পরে আমাদের বন্ধুত্বও শেষ হয়ে গেছে। ( রেগে)

সূর্যঃ আমি যা করেছি বাধ্য হয়ে করেছি। সত্যি বলছি শবনম আন্টি নিজেই বাড়িটা বিক্রি করতে চাইছিলেন। আর ড্যাডও উনার সাপোর্টে ছিলেন।
তুমি এমনেই কতো টেনশনে আছো তাই আমি তোমাকে এটা জানিয়ে আর টেনশন দিতে চাই নি।

ভেবেছিলাম আমি সব সামলে নিতে পারবো। কিন্তু পারি নি ( নিরাশ হওয়ার নাটক করে)

তুমিই বলো এটাকি আমার অপরাধ। হ্যাঁ এটা সত্য যে আমি তোমাকে ভালোবাসি অনেক বেশী ভালোবাসি। কিন্তু কখনো নিজের ভালোবাসার দাবি নিয়ে তোমার কাছে আসি নি। আর আসবোও না সারা জীবন অপেক্ষা করবো তোমার জন্য। (কেঁদে কেঁদে)

শবনমঃ আ’ম স্যরি সূর্য আমি তোমাকে ভুল বুঝেছি। কিন্তু কি করবো বলো কিচ্ছু বুঝতে পারছিলাম না। ক্ষমা করে দিও আমাকে। ??

সূর্যঃ it’s okay Shabnam. আমি কি কখনো তোমার সাথে রাগ করে থাকতে পারি।

( তোমার দূর্বলতা আমি জানি জান। আর তোমার সবচেয়ে বড় দূর্বলতা হচ্ছে তোমার ইমোশন। তুমি অনেক সহজে মানুষকে বিশ্বাস করে ফেলো। স্যরি জান তোমার ইমোশনের ফায়দা তোলার জন্য ?)

তুমি কোথাও যাচ্ছো আমি ড্রপ করে দেই।

শবনমঃ না দরকার নেই আমি অফিসে যাচ্ছি ওখান থেকে একটা দরকারি কাজে যাবো।

আমি আসি বাই,,,,

শবনম চলে যেতেই সূর্যের ফোনে কল আসে,,,

সূর্যঃ হ্যালো

>> বস আধার রেজওয়ান এর সব ইনফরমেশন বের করে ফেলেছি।

সূর্যঃ গুড জব। আমি আসছি ?

সূর্য ফোন পকেটে ঢুকিয়ে বেড়িয়ে যায়।

এইদিকে,,,

শবনম ড্রাইভ করছে এমন সময় রাফির কল আসলো।

শবনমঃ হুম রাফি বলো (কল রিসিভ করে)

রাফিঃ ম্যাম মি. আধার রেজওয়ান আর্জেন্টলি আপনাকে উনার সাথে দেখা করতে বলেছে।

শবনমঃ উনার সাথে আমার ও কথা আছে কোথায় দেখা করতে বলেছেন উনি।

রাফিঃ উনার বাড়ীতে ম্যাম।

শবনম ফোন কেটে দিলো।

শবনমঃ আজকে আমার সব প্রশ্নের উত্তর আপনাকে দিতে হবে মি. আধার রেজওয়ান।

শবনম গাড়ি আধারের বাড়ির দিকে ঘুরিয়ে নেয়।

কিছুক্ষনের মধ্যেই শবনম আধারের বাড়িতে পৌঁছে যায়। শবনম গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির ডোর বেল বাজালো কিন্তু কেউ দরজা খুললো না।

অনেক বার বাজানোর পরেও কেউ ডোর খুলছে না। শবনম রেগে দরজায় বাড়ি দিতেই দরজা খুলে যায়।

শবনমঃ দরজা খোলা আর আমি গাধার মতো বেল বাজাচ্ছি। (বিরক্তিকর ভাব নিয়ে)

শবনম ভেতরে ঢুকে স্তব্ধ হয়ে যায়। ওর আর আযানের ছবি দিয়ে পুরো ড্রইংরুম সাজানো। উপর থেকে গিটারের সুর ভেসে আসছে যেটা আযান সব সময় ওর জন্য বাজাতো। শবনম সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে আসে একটা রুম থেকে আওয়াজ টা আসছে। শবনম দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে যায়। বরাবর দেয়ালে লেখা,,,

I love you still the end of my life.
Aazan love’s Shabnam

শবনমের মুখে হাসির ঝলক ফুটে উঠে। আযান এভাবেই ওকে প্রপোজ করেছিলো। ওর চোখ দিয়ে শুধু পানি পরছে এটা খুশির পানি নাকি কষ্টের ওর নিজের ও জানা নেই।

বারান্দা থেকে কারো গানের আওয়াজ ভেসে আসছে। শবনম ধীর পায়ে ওইদিকে এগিয়ে যায়,,,

Hamein tumse pyaar kitna
Yeh hum nehi jante….
Magar ji nehi sakte
Tumhare binaa….

নিজের পেছনে কারো অস্তিত্ব টের পেয়ে গিটার নিচে রেখে দিলো আধার।

পিছনে ফিরে শবনমের সামনে এসে ওর মুখোমুখি দাঁড়ালো আধার।

শবনম আধারকে অনেক শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। আধার সাথে সাথে ওকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে ধাক্কা মেরে দুরে সরিয়ে দেয়।

শবনম টাল সামলাতে না পেরে পিছনের দেয়ালের সাথে বারি খায়। মাথার পিছনে আঘাত পায় শবনম কিন্তু এতে ওর কোন খেয়ালী নেই ও অবাক চোখে আধারের দিকে তাকিয়ে আছে। আধারের এই রুপ ওর অজানা। আধারের চোখে শুধু ওর জন্য ঘৃণা দেখতে পাচ্ছেন শবনম।

শবনম নিজেকে সামলে নিয়ে আধারের কাছে যেতে নেয় তখনই আধার হাত দিয়ে ওকে থামিয়ে দেয়।

আধারঃ Don’t you dare to come close to me. তোমার আসল রূপ আমি জেনে গেছি এখন আর কষ্ট করে তোমাকে ভালোবাসার এই মিথ্যে নাটক করতে হবে না শবনম চৌধুরী। (রেগে প্লাস চিল্লিয়ে)

শবনমঃ নাটক (অবাক হয়ে)

আধারঃ মাইন্ড ব্লোয়িং শবনম। তোমাকে তো বেস্ট এক্ট্রেস এর এওয়ার্ড দেওয়া দরকার। ??(ক্লাপিং করতে করতে)

অনেক কষ্ট হচ্ছে তাইনা আমাকে জীবিত অবস্থায় দেখে। তোমার এতো কষ্ট করে করা নাটক আমাকে মারার প্লান সব বরবাদ হয়ে গেলো তাইনা। ( দাঁতে দাঁত চেপে কড়া গলায়)

আধারের প্রত্যেকটা কথায় শবনম অবাকের চরম সীমানায় পৌছে যাচ্ছে।

শবনমঃ কি আবলতাবল বলছে আধার আমি ওকে মারার প্লান করেছি। আমার ভালোবাসা ওর কাছে নাটক মনে হয়। ( মনে মনে )

আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি আধার আর আমিই কিনা তোমাকে মারবো তুমি এটা ভাবতে পারলে। এটাই কি তোমার ভালোবাসা।

শবনমের কথায় আধার রেগে ওকে দেয়ালে চেপে বলতে শুরু করে,,,

আধারঃ ভালোবাসার কথা তোমার মুখে মানায় না। তোমার বাবা আমার বাবা মাকে খুন করেছিলো। আমাকে অনাথ করে দিয়েছিলো। আর তুমি আমাকে মারার জন্য এতো কিছু করলে।

কিন্তু আফসোস আমি বেঁচে গেছি আর তোমার কাছ থেকে নিজের প্রতিশোধ নিতে ফিরে এসেছি।

শবনমঃ আমার বাবা এমন কিছু করে নি আর না আমি তোমাকে মারার চেষ্টা করেছি। কেউ তোমাকে ভূল বুঝিয়ে দিয়েছে আযান। প্লিজ আমাকে এক্সপ্লেইন করার একটা সুযোগ দাও। (কেঁদে কেঁদে )

আধারঃ Just shut up. আমি তোমার কোন কথা শুনতে চাই না। আজকে থেকে তোমার বরবাদীর দিন শুরু শবনম চৌধুরী। অনেক ভালবাসো নিজের বাবাকে তাইনা। তো এখন নিজের বাবার ড্রিম প্রজেক্ট কে বাঁচিয়ে দেখাও।

গরীব শিশুদের জন্য স্কুল খোলার স্বপ্ন ছিলো তোমার বাবার তাইনা। আর এই প্রজেক্টে তুমি তোমার সব টাকা ইনভেস্ট করে দিয়েছো। কিন্তু আফসোস এই ড্রিম প্রজেক্ট আর পুরো হবে না?

শবনমঃ মানে কি বলতে চাও তুমি (অবাক হয়ে)

আধারঃ মানে এটা যে আমি তোমার প্রজেক্ট কিনে ফেলেছি। এখন আর এই স্কুল তৈরি হবে না।

শবনমঃ You can’t do this Aadhar. আমার আব্বুর স্বপ্ন এটা। তুমি তো আমাকে ঘৃণা করো তাহলে এর শাস্তি ওই বাচ্চা গুলোদের কেন দিচ্ছ। যা শাস্তি দেওয়ার আমাকে দাও যা কষ্ট দেওয়ার আমাকে দাও কিন্তু প্লিজ এমন কিছু করো না। ???

আধার শবনমের হাত জোরে ধরে বলতে শুরু করে,,,

আধারঃ এটা তো জাস্ট শুরু আরো অনেক কিছু বাকি আছে তোমার জন্য।

বলে শবনমের হাত ধরে টানতে টানতে বাড়ির বাইরে বের করে দরজা লাগিয়ে দেয় আধার।

শবনম বাইরে দরজা ধাক্কাচ্ছে আর বলছে,,,

শবনমঃ আধার প্লিজ একবার আমার কথা শুনো। আমি কিচ্ছু করি নি আমার আব্বুও কিচ্ছু করে নি। সব তোমার ভুল প্লিজ একটা বার আমাকে সুযোগ দেও আমার সত্যতা প্রমাণ করার।

অনেক বলার পরেও আধার দরজা খুললো না।

শমনমঃ তুমি অনেক বড় ভুল করে ফেললে আধার অনেক বড়। যখন নিজের ভুল বুঝতে পারবে তোমার কাছে আমি থাকবো না। যে নিজের ভালোবাসাকে বিশ্বাস করতে না পারে তার ভালবাসার কোন অধিকার নেই। I hate you Aadhar I just hate. ??

শবনম দৌড়ে ওখান থেকে বেড়িয়ে গেল।

শবনম যেতেই আধার ও ওর রুমে চলে আসলো।

আধার পুরো বাড়ি তছনছ করে দিচ্ছে। বাড়ির সব জিনিস পত্র ভেঙ্গে চুরমার করে দিচ্ছে ও।

হঠাৎ ওর নজর ওই দেয়ালে যায় যেখানে শবনম আঘাত পেয়েছিলো। দেয়ালে রক্ত লেগে আছে। আধার দেয়ালটার সামনে গিয়ে রক্ত টুকু ছুইয়ে দেখলো।

আধারঃ আমি তোমাকে আঘাত করেছি নিজের ভালোবাসাকে আঘাত করেছি। How could I do that….

বলে দেয়ালে নিজের হাত দিয়ে ইচ্ছা মতো ঘুষি মারছে।

How could I do that damn it. ওকে কিভাবে আমি আঘাত করলাম,,,,

আধার ওখানেই হাটু ভাজ করে বসে পরলো চিৎকার করে কাঁদছে আধার। ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে ওর হাত থেকে।

হঠাৎ ফোনের MMS টোন বেজে ওঠে আধার রক্তাক্ত হাতে ফোনটা তুলে MMS চেক করে।

MMS টা দেখার পর আধারের পায়ের নিচে থেকে যেন মাটি সরে যাচ্ছে। আশরাফ আর সূর্যের MMS যেখানে ওরা সব কিছু কবুল করেছে।

MMS টা দেখার পর আধারের হাত থেকে ফোন টা পরে যায়।

শবনমের বলা প্রতিটা কথা ওর কানে বাজতে শুরু করে। মাথা ঘুরছে আধারের।

আধারঃ এতো দিন আমি মিথ্যাকে আঁকড়ে ধরে ছিলাম। সত্য আমার সামনে ছিলো কিন্তু আমি নিজের ঘৃণায় এতোটা অন্ধ ছিলাম যে নিজের ভালোবাসাকে বিশ্বাস করতে পারি নি।

আমি শবনমের প্রতি কতটা অন্যায় করেছি। ও ও কখনো আমাকে ক্ষমা করবে না she’ll hate me (কেঁদে কেঁদে)

ওর সামনে কিভাবে যাবো আমি। নজর মিলাবো কিভাবে ওর সাথে।

আধার উঠে নিজের মাথা দেয়ালের সাথে বারি দিতে থাকে।

আনাস দৌড়ে এসে আধারকে ধরে। আধারকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না।

এইদিকে,,,,

শবনম ড্রাইভ করছে আর কান্না করছে।

শবনমঃ কখনো ক্ষমা করবো না তোমাকে কখনো না। I hate you Aazan I just hate you.??

হঠাৎ শবনমের চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। মাথায় প্রচন্ড পেইন শুরু হয়ে যায়। শবনম দুই হাত দিয়ে নিজের মাথা চেপে ধরে। নাক দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে ওর।

এতো বেশি পেইন করছে যে শবনম চিৎকার ও করতে পারছে না।

চোখের সামনে আলো পরায় সামনে তাকায় ও। একটা ট্রাক ওর গাড়ির দিকেই আসছে।

শবনমঃ এটাই হয়তো তোমার #Hate_Story এর শেষ পরিণতি আধার রেজওয়ান। আমার সাথে হয়তো তোমার এই ঘৃনাও শেষ হয়ে যাবে আজ।
ভালোবেসে ছিলাম তোমায় কিন্তু তার বদলে সামান্য বিশ্বাস টুকু ও পেলাম না। (তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে)

একবার তুমি চলে গিয়েছিলে এবার আমি চলে যাবো। তুমি তো ফিরে এসেছো হয়তো আমি ফিরে আসবো না,,,

হঠাৎ শবনমের গাড়ি ট্রাকের সাথে বারি খায় আর বিকট একটা আওয়াজ হয়।

To be continued…..

?#The_Hate_Story?
?#Madness_Love?
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_17

আনাস অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই আধারকে কন্ট্রোল করতে পারছে না।

আনাসঃ স্যার আপনার কিছু হলে ম্যাডাম এর কি হবে আপনি জানেন। উনি এখন শত্রুদের ঘেরায় আছেন। আর কে কখন ওনার কি ক্ষতি করে বসে তার থেকে উনি অজানা।

Please control your self. নিজের জন্য না হলেও ম্যামের জন্য ভাবেন।

আনাসের কথায় আধার কিছুটা শান্ত হয়।

আধারঃ You are right Anas.আমাকে শবনমকে সব জানাতে হবে। ওর চারোদিকে বিপদ। I… I have to save her… I have to…

বলে আধার দৌড়ে বেড়িয়ে যায়। আনাস ওর পিছু পিছু আসছে ওকে আটকানোর জন্য।

আনাসঃ স্যার যা করার সকালে করবেন এখন আপনাকে ডাক্তার দেখাতে হবে।প্লিজ স্যার ওয়েইট।

আধারের মাথা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে হাত দিয়ে টপটপ করে রক্ত পরছে কিন্তু আধার কিছুতেই থামছে না।

হঠাৎ সিড়ি দিয়ে দৌড়ে নামতে গিয়ে আধার ব্যালেন্স হারিয়ে গড়িয়ে নিচে পরে যায়। আধারের চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। আস্তে আস্তে আধার চোখ বন্ধ করে ফেলে।

আধারের সামনে দাঁড়িয়ে আছে শবনম। সাদা রঙের জামা খোলা চুল গুলো এলো মেলো ভাবে বাতাসে উড়ছে। ঠোঁটে মন ভুলানো সেই মায়াবী হাসি।

আধার শবনমের দিকে এক কদম এগোলে শবনম এক কদম পিছিয়ে যাচ্ছে।

আধার নিজের হাত শবনমের দিকে বাড়াতেই শবনম হাওয়ায় মিশে যায়।

বিছানা থেকে লাফ দিয়ে উঠে আধার। ঘামে পুরো শরীর ভিজে যাচ্ছে। বড় বড় নিঃশ্বাস নিচ্ছে ও।

পাশে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ভোর পাঁচটা বাজে।

আধারঃ স্বপ্ন ছিলো (স্বস্তির নিশ্বাস নিয়ে) কিন্তু অনেক ভয়ঙ্কর স্বপ্ন।

হঠাৎ আধারের শবনমের কথা মনে পরে যায়।

আধারঃ আমাকে শবনমের কাছে যেতে হবে। সব ভুল ভাঙ্গতে হবে। ক্ষমা চাইতে হবে ওর কাছ থেকে। ও নিশ্চয়ই রেগে আছে। কান্না করছে আমার জন্য।

আ আমি আসছি তোমার কাছে শবনম। সব কিছু ঠিক করে দিবো আমি। I’m coming…

আধার বিছানা থেকে উঠতে নিলে মাথা অনেক ভারি অনুভব করে ঘুরছে মাথাটা। আধার খেয়াল করলো ওর হাতে আর মাথায় ব্যান্ডেজ করা।

আধার কোন রকমে উঠে ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে চলে যায়। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আধার গায়ে একটা সাদা শার্ট জড়িয়ে নিচে নেমে আসে।

আনাস আধারের মেডিসিন নিয়ে উপরে আসছিলো। আধারকে নিচে নামতে দেখে ও অনেক টা ঘাবরে যায়।

আনাসঃ ও নো স্যার জেগে গেছেন। এখন নিশ্চই উনি শবনম ম্যাডাম এর কাছে যেতে চাইবেন। স্যার এর শরীর এমনেই ভালো না ডক্টর বলেছে ওনাকে রেস্ট নিতে। এখন যদি স্যার এই খবর জেনে যান তাহলে উনি আরো অসুস্থ হয়ে পরবেন। This can be very risky for him.

এখন কিছুতেই স্যারকে এসব জানানো যাবে না। (মনে মনে)

আধার যেতে নিলে আনাস ওকে বাধা দিয়ে দাঁড়ায়।

আধার ভ্রু কুঁচকে আনাসের দিকে তাকালো।

আধারঃ Whatt!!

আনাসঃ স্যার ডক্টর বলেছে আপনাকে রেস্ট করতে আপনি প্লিজ আজকে কোথাও বেড়োয়েন না।

আধারঃ Don’t teach me Anas. আমার কি করতে হবে আর কি না সেটা আমি ভালো বুঝি। সরো সামনে থেকে।

আনাসকে সরিয়ে আধার হাটা ধরলো।

আনাস আবারো আধারের সামনে দাঁড়ালো।

আনাসঃ স্যার প্লিজ আমার কথা শুনেন।

আনাসের ব্যবহারে আধারের কেমন জানি খটকা লাগছে।

আধারঃ তুমি আমার কাছ থেকে কি লুকাচ্ছো আনাস। ( সন্দেহের চোখে)

আনাসঃ ক কই কা কিচ্ছু না স্যার ?

আধার আনাসের সামনে এসে ওকে বলল,,

আধারঃ আ’ম সিওর তুমি কিছু লুকাচ্ছো। Just speak up damn it ( ধমক দিয়ে)

আধারের ধমকে আনাস অনেকটা কেঁপে উঠে।

আনাসঃ ম ম্যাডাম হ হসপিটালে এডমিট। ( ভীতু গলায়)

আনাসের কথায় আধার দুই কদম পিছিয়ে যায়।

আধারঃ শবনম হসপিটালে। ক কেন কি হয়েছে ওর। ও ঠিক আছে তো। তুমি কিছু বলছো না কেন আনাস??

আনাসঃ কালকে এখান থেকে বের হওয়ার পর ওনার গাড়ির এক্সিডেন্টে হয়েছে।

হ্যাঁ স্যার। গাড়ির সামনে ট্রাক চলে আসে ট্রাক ড্রাইভার নিজের ট্রাক কন্ট্রোল করে সাইডে করে নেন। কিন্তু ম্যাডাম নিজের গাড়ি কন্ট্রোল করতে পারে নি তাই একটা বড় গাছের সাথে বারি খেয়ে এক্সিডেন্টে হয়ে যায়।

ওই ট্রাক ড্রাইভারই উনাকে হসপিটালে ভর্তি করে দেন।

আধারঃ এতো কিছু হয়ে গেছে আর তুমি আমাকে কিছু বলো নি।( রেগে পাশে থাকা টেবিল উল্টিয়ে ভেঙ্গে ফেললো)

সব আমার দোষ,, আমার কারনে হয়েছে সব। শবনমের এই অবস্থার জন্য একমাত্র আমি দায়ি।
কাঁদতে কাঁদতে ফ্লোরে বসে পরলো আধার।

আনাস আধারের পাশে বসে ওকে শান্ত করার চেষ্টা করছে,,,

আনাসঃ স্যার আপনি কালকে ফেইন্ট হয়ে গিয়েছিলেন তাই জানাতে পারি নি। আর ডাক্তার ও বলেছিলো আপনাকে রেস্ট নিতে তাই আর বলতে পারি নি।

কিন্তু স্যার এখন আপনাকে নিজেকে স্ট্রং করতে হবে। please control your self sir.

আধারঃ আমাকে ওর কাছে যেতে হবে। এক্ষুনি যেতে হবে। চলো আনাস We have to go there right now.শবনমের আমাকে প্রয়োজন she needs me.

উঠে দাঁড়িয়ে নিজের চোখের পানি মুছে আনাসকে নিয়ে বেড়িয়ে পরলো আধার।

In Hospital,,,,

ICU এর বাইরে বসে আছে মায়া আর সূর্য। এক নাগাড়ে কান্না করতেই আছে মায়া। সূর্য দাঁড়িয়ে ICU এর দিকে তাকিয়ে আছে।

মায়াঃ আল্লাহ প্লিজ আমার মেয়েটাকে সুস্থ করে দাও। অনেক কষ্ট করেছে ও আর কষ্ট দিও না ওকে। আমার মেয়ে ছাড়া আর কেউ নেই আমার আল্লাহ। সবই তো কেরে নিলে ওকে আমার কোলে ফিরিয়ে দাও। (কাঁদছে আর বলছে মায়া)

সূর্যঃ কিছু হবে না তোমার শবনম। যে এই কাজ করেছে তাকে শেষ করে দিবো আমি। সে নিজেই নিজের মৃত্যুকে টেনে এনেছে। I will destroy him….( চোখ দিয়ে যেন আগুন ঝরছে সূর্যের)

ICU এর লাইট অফ হতেই সোজা হয়ে দাঁড়ালো সূর্য। রুম থেকে ড.আফজাল ( শবনমের বাবার বন্ধু) বের হয়ে আসলেন। চোখে মুখে চিন্তার ছাপ আর ভয় উভয় কাজ করছে তার। আফজাল বের হতেই সূর্য আর মায়া উনার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।

মায়াঃ আমার মেয়ে ঠিক আছে তো আফজাল। ওর কোন বিপদ হয় নি তো। আমি ওর সাথে এখনই দেখা করবো (অস্থির হয়ে)

আফজাল চোখ নিচে নামিয়ে চুপ করে আছে।

আফজালকে চুপ থাকতে দেখে সূর্য উনাকে জিজ্ঞেস করলো,,,

সূর্যঃ কি হয়েছে আঙ্কেল আপনি চুপ করে আছেন কেন?? শবনম ঠিক আছে তো??

আফজালঃ আসলে এক্সিডেন্টটা এতো সিরিয়াস ছিল না কিন্তু!!!

মায়াঃ কিন্তু কি??

আফজালঃ সমস্যা টা হচ্ছে ওর রোগ নিয়ে।

সূর্যঃ রোগ!! ওতো একদম সুস্থ ছিলো। আপনি কোন রোগের কথা বলছেন। আর কোনো রোগ হলে তো আমরা জানতাম।

মায়াঃ হ্যাঁ আর আপনি তো জানেন শবনম আমার কাছ থেকে কখনো কিচ্ছু লুকায় না। এমন কিছু হলে ও আমাকে বলতো। ওতো সব সময় হাসি খুশি আর নরমাল বিহেভ করতো তাহলে,,,

আফজালঃ হাসি মুখের পিছনে লুকানো কষ্ট সবার চোখে পরে না মায়া। শবনমের ব্রেইনে একটা কট ছিলো। ডিপ্রেশনের কারনে এটা তৈরি হয়েছে। কয়েক মাস আগেই এটা ধরা পরেছে। আমরা এর চিকিৎসা ও করছিলাম লুকিয়ে। শবনম তোমাদের টেনশন দিতে চায় নি তাই আমাকে নিষেধ করেছিলো তোমাকে জানাতে।

এই কটের কারনে মাথায় প্রচন্ড পেইন শুরু হয় যা সহ্য করার মতো না। অনেক সময় নাক আর মুখ দিয়ে রক্ত ও বের হয়। এর জন্য আমি ওকে মেডিসিন ও দিয়েছিলাম।

সব ঠিকঠাক যাচ্ছিলো কয়েকদিন পর এর অপারেশন ছিলো। অপারেশন করালে ও সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যেত কিন্তু তার আগেই এই এক্সিডেন্ট হয়ে গেলো।

কিন্তু আমি একটা কথা বুঝতে পারছি না এক্সিডেন্টে শবনম বেশি ব্যাথা পায়নি। ওর কপালে বা আশেপাশে কোন কাটা আঘাত ছিল না। তাহলে ওর মাথার পিছনে আঘাত আসলো কোথা থেকে। ওটা এক্সিডেন্টের মনে হয় না হয়তো আগে ও কোথায় বারি বা আঘাত পেয়েছে যার কারনে কট টা তীব্র হয়ে গেছে। (চিন্তিত হয়ে)

মায়াঃ ও সব আমি বুঝি না আমার মেয়ে এখন কেমন আছে এটা বলেন,,, (কেঁদে কেঁদে)

আফজালঃ ওকে Under Observation এ রেখেছি। চব্বিশ ঘন্টার আগে ওর সেন্স না ফিরলে কোমায় চলে যাবে (নিরাশ হয়ে)

আফজালের কথা শুনে মায়া ধপ করে ফ্লোরে বসে পরলো আর কাঁদতে শুরু করল।

সূর্য মায়ার পাশে বসে ওকে শান্ত করার চেষ্টা করছে।

একটু দূর থেকে আধার আফজালের কথা গুলো শুনছিলো। ওর পা জমে যাচ্ছে শরীর কাঁপছে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না আধার। আধার পরে যেতে নিলেই আনাস ওকে সামলে নেয়।

আনাসঃ স্যার আপনি ঠিক আছেন। ডক্টরকে ডাকবো??

আধারের চোখের সামনে শুধু একটা জিনিসই ঘুরছে,, ও শবনমকে ধাক্কা দিয়েছিলো যার কারনে শবনম মাথার পিছনে আঘাত পায়।

আধার বিরবির করে বলতে শুরু করে,,,

আধারঃ আজ আমার ভুলের কারনে তোমার এই অবস্থা শবনম। কিভাবে পারলাম আমি তোমাকে হার্ট করতে হাও…..কিচ্ছু হতে দিবো না তোমাকে। কোথাও যেতে দিবো না আমাকে ছেড়ে,,,, কোথাও না,,,

To be continued…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here