#Ex_ব্রেস্টফ্রেন্ড_যখন_বউ♥
#পর্ব_৮
#লেখক_Ananta Sanny
(অনন্ত দাড়িয়ে যায়, কি বলবে বুঝতে পারছেনা)
-কি হলো কিছু বলবে?? সময় নেই আমার (অনন্যা)
-ভালো থেকো(অনন্ত কল টা কেটে দেয়। আর ফোনটা রাস্তার পাশে ফেলে দেয়)
,,
ফোন ফেলে দেওয়া দেখে তিথি তো সেই লেভেল এর অবাক হয়।
-এই এই কি হইছে তোমার??(তিথি)
-…..(অনন্ত কিছু না বলে, রাস্তার উপরই বসে পড়লো)
-এই খারাপ লাগছে??
-……(অনন্ত পাথর এর মতো হয়ে গেছে)
-কি হইছে বলো না কেনো??
-ও নেই (কান্না করে)
-ও নেই মানে!! কে নেই??
-ও নেই, আমাকে রেখে চলে গেছে,
-কেএএএএএ
-অনন্যা
-কিহহহহহ, ও তোমাকে রেখে কই যাবে?? কি আবল তাবল বলছো??
-ও একটা ছেলেকে ভালবাসে..(অনন্যার পুরো ঘটনা তিথি কে বলল)
,,
কথা টা শুনে তিথিও বসে পড়লো
-ওর তো এমন কাজ করার কথা না (তিথি)
-…….(অনন্ত চুপ করে আছে, কিন্তু তার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে)
-আচ্ছা দাড়াও তো ওর বাসায় ফোন দিয়ে দেখি…
-আপনাকে তো বললাম, ও পালিয়েছে, ওর বাসায় ফোন দিতে হবে না
-ওহহহ
-আচ্ছা আমি তো ওকে কম ভালো বাসি নি, আমাকে ছেড়ে চলে গেলো কেনো??
-ও যে ভালবাসে নি সেই জন্য,
-এখন বাসায় কি বলব??
-সত্যি যা তাই বলবে, আর বলবে আমি তোমার বউ হতে চাই
-ঠাসসসসসসসসসসসস
,,
কথাটা শুনে তিথি কে চড় মারে অনন্ত, আর একবার যদি এই বউ বিয়ের কথা আমার সামনে বলছেন, তাহলে আমি এই জব আর আপনাকে ছেড়েই চলে যাবো…
,,
তিথি গাল ধরে বসে আছে…চড় টা বেশ জড়েই মেরেছে, গাল টা একদম লাল হয়ে গেছে। মুখের এমন অবস্থা মনে হচ্ছে কান্না করে দিবে…
-এমমম এ্যা এ এ এখন চলেন যাওয়া যাক (তিথি)
-আপনি যান, আমার যখন ইচ্ছা যাবো আমি, আর আমার পিছু পিছু আপনি থাকবেন না বলে দিলাম
-আচ্ছা…(তিথি উঠে দাড়ায়)
,,
,,
অনন্ত বসেই থাকে, আর তিথি সেখান থেকে রাস্তার আর একপাশে যায়। একটা গাড়ি ঠেকিয়ে উঠতে যাবে তখনই তিথি ভাবে..
-ধুররর আমি একটা চড় খেয়ে চলে যাচ্ছি কেনো?? হাজার টা মাড়লেও থাকতে হবে, ও যদি এখন কিছু করে বসে, নাহহ যাওয়া যাবে না। (তিথি এটা ভেবে আর গাড়িতে উঠে না)
,,
,,
রাস্তার বিপরীত পাশে দাড়িয়ে, অনন্ত কে ফলো করে। অনন্ত বার বার হাত দিয়ে তার চোখের পানি মুচ্ছে। আর এদিকে তিথি একটা গাছের আড়ালে দাড়িয়ে অনন্তর খেয়াল রাখছে…
,,
সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পর উঠে আর সেখান থেকে হোটেলে চলে যায়। অনন্ত যেখানে মোবাইল টা ফেলে দিয়েছিলো সেখান থেকে মোবাইল টা কুড়িয়ে নিয়ে তিথিও হোটেলে চলে যায়।
,,
অনন্ত রুমে এসেই ধপাসস করে বিছানায় শুয়ে পড়ে..আর পুরনো কথা গুলো ভাবতে থাকে..। রাতে সে কোনো খাবার খায় নি। সকালেও সে কোনো খাবার খায় নি। খাবার কম অর্ডার করায় কেয়ার টেকার, অনন্তদের বস মানে তিথির কাছে যায়…
-ম্যাডামো (কেয়ার টেকার)
-হ্যা বলো(তিথি)
-আপনাদের একজন রাতে আর সকালে কিছুই খাচ্ছে না, উনি বলেছেন দুপুরেও যাতে খাবার নিয়ে না যাই..উনি কি বাইরে থেকে খেয়ে আসেন??
-কত নাম্বার রুম??
-৭২৪
-ওহহহ(তিথি বুঝতে পারলো যে অনন্ত ই তাহলে খাওয়া দাওয়া অফ করে দিয়েছে)
-আচ্ছা শোনো দুপুরে ওর রুমে খাবার দিয়ে আসবে,
-উনি যে মানা করছেন
-আমি বলছি দিয়ে আসবে, আর উনি অবশ্যই খাবেন
-ওকে ম্যাম
,,
,,
তিথি গেলো অনন্তর রুমে…
-রাতে আর সকালের খাওয়া খান নি কেনো??(তিথি)
-এমনি খেতে ইচ্ছা করছে না (অনন্ত শুয়ে ছিলো, তিথি আসছে তাও উঠছে না, তিথি এটা দেখে একটু অবাক ই হয়)
-তাই বলে খাবে না
-না
-আচ্ছা কয়দিন না খেয়ে থাকবে??
-না খেয়ে মরে যাবো
-লাত্থি দিয়ে বিছানা থেকে ফেলে দিবো
-…..(তিথির এমন কথা শুনে, শোয়া অবস্থায় অনন্ত অবাক হয়)
-এই তুই যদি না খেয়ে মরে যাস, দোষ তো হবে আমার, আমার দায়িত্বে তোদের সবাইকে নিয়ে আসছি তাই না??
ভালভাবে বললাম খেয়ে নিস
-হুমমম
-আর হ্যা বউ চলে গেছে তো কি হইছে?? বউ এর অভাব পড়ছে?? আমার কথা বলছি না কিন্তু, শোন ওর থেকে ভালো মেয়ে তোকে বিয়ে করাবো।
-লাগবে না, আমি আর বিয়ে করবো না
-চোপপপপপ মিথ্যা ভালবাসার মধ্যে এতদিন ছিলি আর আল্লাহ যা করছে ভাল করছেন।
-হুমমম
-এখন উঠো অফিসে যেতে হবে
-আচ্ছা যান আসছি আমি
-আচ্ছা তুমি মথা নিচের দিক অভাবে দিয়ে আছো কেন কি হইছে??
-কই কিছু না তো
-দেখি তাকাও এদিকে
-না কিছু হয় নি
,,
,,
তিথি বিছানায় গিয়ে, অনন্তদের মাথা টা উপরের দিক তুলল…..
-হায়য়য়য়য় আল্লাহ এ কি অবস্থা করছো, কান্না করতে করতে চোখ এর বারোটা বাজাইছো!!!! (তিথি)
-…..(অনন্ত উঠে দাড়ায়)
-একি বালিস তো একদম ভেজা, এগুলো কি চোখে পানি, নাকি হিসু করছো??
-….(কথা টা শুনে অনন্ত মুচকি হাসে)
-রেডি হয়ে নাও, সময় বেশি নেই…
,,
,,
অনন্ত বুঝতে পারে তার মন ভালো করার জন্য, তিথি অনেক চেষ্টা করছে। মেয়েটা সত্যি পাগল। হঠাৎ করে আবার অনন্যার কথা মে পড়ে যায় অনন্তর, আবার মন খারাপ।
,,
,,
সেদিন এভাবেই দিন পার হয়ে যায়। তিথি দরকার ছাড়া অনন্তর এর সাথে তেমন আর দেখা করে না, তবে খেয়াল রাখে সবসময়। এমন ভাবে খেয়াল রাখে অনন্ত বুঝতেই পারে না।
,,
পরদিন সকাল বেলা…
মোবাইল এর রিংটোন এ অনন্তর ঘুম ভেঙে যায়… অনন্ত উঠে দেখে তার বালিশ এর নিচেই একটা নতুন মোবাইল.।
একটা ফোন বাজছে, অনন্ত হাতে নিয়ে দেখলো তার বাবা ফোন দিয়েছে, অনন্ত তো সেই অবাক তার সিমটাই মনে হয়….
অনন্ত তাড়াতাড়ি ফোন টা রিসিভ করে…
-হ্যালো বাবা (অনন্ত)
-হ্যা তোর নাম্বার গতদিন অফ ছিলো কেনে?? (বাবা)
-বাবা ফোন হারায়া গেছে
-ওহহ আচ্ছা শোন, কিভাবে যে বলব তোকে
-বাবা জানি আমি, আপনি অনন্যার কথা বলবেন
-হুমমম
-ও যাওয়ার আগে, আমাকে সব বলে গেছে,
-তোর মা তো তোর জন্য টেনশন করছে অনেক
-কই মার কাছে ফোন দেন তো
-এখন ঘুমাচ্ছে,
-আচ্ছা তাহলে ডাক দিয়ো না পরে কথা বলব, আর হ্যা আমি ঠিক আছি, কোনো চিন্তা কইরেন না।
-আচ্ছা সময় মতো খাওয়া দাওয়া করে নিস
-আচ্ছা বাবা
,,
,,
বাবার সাথে কথা বলার পর অনন্ত ভাবে নিশ্চয় এটা তিথির কাজ…অনন্ত উঠে তিথির রুমে যাবে তখনই
-উঠতে হবে না, আমি জানি আপনি এখন আমার রুমেই যাবেন(তিথি ভেতরে আসতে আসতে বলল)
-এই ফোন কার??(অনন্ত)
-আপনার
-আমার ফোন এটা না, আর ফোন লাগবে না, আমার সিম পেয়েছেন কোথায়??
-সেদিন আপনার ওই ফোনটা আমি যেভাবেই হোক সংগ্রহ করি, তার পর দেখি ফোন টার যা তা অবস্থা, আর তাই ভাবলাম আপনাকে একটা গিফ্ট দেই। এই জন্য ফোনটা দিলাম….
-হুমমম থ্যাংকস সিমটা আমি রাখলাম, আপনি ফোন টা নিয়ে নেন, আমি একটা ফোন কিনে নিবো
-বন্ধুর টা গিফ্ট হিসেবে রাখা যায় না??
-…..(অনন্ত ভাবছে)
-কি নেওয়া যাবে না???
-……..
-ওকে ওকে পর মানুষের টা নিতে হবে না, দেন আমার ফোন আমাকে দেন
-না থাক,
-….(তিথি এত খুশি হয় যে মনে হয় এখন লাফ দিবে)
-ম্যাডাম আমাদের আজকে কয়টা পর্যন্ত ট্রেনিং??
-৪ টা
-তার মানে আজ আসতে ভালই লেট হবে
-হ্যা
-আচ্ছা আপনি যান আমি রেডি হয়ে নিচ্ছি
-ওকে তাড়াতাড়ি, কাল কিন্তু লেট করেছো
-হুমম আজ লেট হবে না…
,,
,,
অনন্ত রেডি হয় সবার আগে, বাইরে এসে অপেক্ষা করছে সবার জন্য। সবাই এসেছে কিন্তু তিথি ম্যাম আসছে না। অনন্ত ফোন করলো, ফোন টাও রিসিভ করছে না। সবাই অনন্ত কে পাঠিয়ে দিলো কারন সবাই জানে তার সাথেই তিথির বেশি মিল।
,,
,,
অনন্ত তিথির রুমের সামনে গিয়ে দেখে ভেতর থেকে দরজা আটকানো
তিথিকে ডাকা ডাকি করে কিন্তু কোনো সাড়া শব্দ নেই। কয়েকবার ডাকার পর অনন্ত বুঝতে পারে নিশ্চই কিছু হইছে…
,,
,,
অনন্ত কয়েকবার দরজায় জোড়া ধাক্কা দিতেই দরজটা খুলে যায়…
ভেতরে প্রবেশ করে দেখে তিথি মেঝেতে অজ্ঞান হয়ে শুয়ে আছে..
অনন্ত তাড়াতাড়ি পানি নিয়ে তিথির মুখে ছিটিয়ে দেয়..
-ম্যাডাম ম্যাডাম (অনন্ত)
-…..
-ম্যাডাম উঠেন
-….
-এই যে ম্যাডাম
-এ্যাহহহ
-কি হইছে?? এভাবে পড়ে আছেন যে
-এই মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ছিলাম
-শরীর খারাপ??
-জানি না হঠাৎ করেই এমন হলো
,,,
,,
তিথি উঠতে যাবে তখন আবার পড়ে যায়, এবার অনন্ত কেনো রকমে ধরে ফেলে, তিথি আবার জ্ঞান হারায়…
চলবে
?গল্প কেমন হয়েছে জানাতে ভুলবেন না?