Drama_Queen_VS_Mr_Handsome,Part_9,10

0
1792

Drama_Queen_VS_Mr_Handsome,Part_9,10
Writer_Neela
Part_9
.
.
নীলা: কি পানি খাবেন বলুন মিনারেল ওয়াটার, নরমাল ওয়াটার,পুকুরের পানি, ঝর্নার পানি, নদীর পানি,ডাবের পানি কোনটা?

নীল: থাক আমি কিছু খাবো না।

নীলা:আরে তা বললে হয় নাকি বাসায় বিশেষ অতিথি আপনি অফকোর্স আমার সবচেয়ে বেশি কাছের অতিথি তাই না বিয়াই।

নীল: আসলে আমার জন্য না এইটা ই সবচেয়ে বড় প্রবলেম মানুষের কি অভাব পড়েছিলো যে তোমার মতো কারো ই আমার বিয়াইন হতে হলো।

নীলা: এক্সকিউজ মি!!

নীল: ইয়েস?

নীলা: আপনি কি বোঝাতে চাচ্ছেন আমি খারাপ দেখুন লাখে একজন আমি আমার মতো কয়জন আছে বলুন তো?

নীল: ভাগ্যেস তোমার মতো কেউ নেই তাহলে আমার মতো আর কার না যেনো দূরভাগ্য ছিলো ‌

নীলা:দেখুন আপনি কিন্তু বেশি বেশি বলছেন আমি অনেক ভালো।

নীল: আহহহ ভালো রিয়েলি?

নীলা: ইয়াপ মিস্টার।

নীল: তুমি তো কুচুপুচু

নীলা: হুয়াট মিন কুচুপুচু।

নীল: তুমি ও যেমন নিউ নেইম ইনভেনশন করো আমিও করলাম তোমার সাথে কুচুপুচু নাম টা খুব মানায়।

নীলা:এই আপনি আমার বাসা থেকে বের হন বলছি আমার বাসা থেকে বের হন।

নীল: তোমার বাসা নাকি আমার আন্টি আঙ্কেল এর বাসা।

নীলা: হাআআআহহহহ আপনার আঙ্কেল আন্টির মেয়ে আমি ভবিষ্যতে এই বাসা টা আমাদের ৩ ভাই বোনের ই হবে।

নীল:আগে হোক তারপর বইলো এখন এতো পটপট কইরো না পরে কিছু পাবা না এখনি সম্পত্তি ভাগ শুরু করে দিয়েছে।

নীলা: আমি কখন বললাম আমি সম্পত্তি ভাগ করেছি দেখুন আপনি কিন্তু না বুঝে শুনে আমার উপর ব্ল্যাম করে যাচ্ছেন।

নীল: যে যেমন তাকে তো সেইভাবে ই‌ ব্ল্যাম করবো তাই না।

হঠাৎ নীলা কোনো উত্তর দিচ্ছে না নীল নীলার চোখের দিকে তাকালো___

নীল: হায় আল্লাহ তুমি কাঁদো কেন

নীলা:আপনি কথা বলবেন না।

নীল:আরে কুচুপুচু সরি আর কখনো আপনা কথার উত্তর দিবো না সত্যি।

নীলা চোখ মুছে হাসি দিয়ে নীলের দিকে তাকিয়ে বললো___

নীলা:সত্যি।

নীল: কি মেয়েরে বাবা কাঁদতেও টাইম লাগে না হাসতেও টাইম লাগে না।

নীলা: আপনি কিন্তু বলছেন না?

নীল: কিছু বলবো না।

নীল ও নীলা হঠাৎ আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো আশেপাশে কেউ নেই।

নীলা:সবাই কই গেলো।

নীল: তোমার কথা শুনে পালিয়েছে আসলে তোমার কন্ঠ টা যে কি পরিমান কানে বাজে বলে বোঝাতে পারবো না।

নীলা কিছু বলতে যাবে তখনি হঠাৎ করে সাউন্ড আসলো “ঠিকঠিক” নীল মুখ চেপে হাসতে লাগলো। নীলা রাগি চোখে দেয়ালে টিকটিকি খুঁজতে লাগলো___

নীলা: এই কোন টিকটিকি ঠিকঠিক আওয়াজ করলি আমাকে ভয় পেয়ে লুকিয়ে গিয়েছিস সাহস থাকলে সামনে আয়।

নীল: বাপরে হুয়াট আ থ্রেট।

নীলা:দেখেছেন ঠিকঠিক বলার সাহস করেছে সামনে আসার সাহস করে না।

নীল দেয়ালের দিকে তাকিয়ে নীলাকে চোখ দিয়ে ইশারা করে বললো দেয়ালের দিকে তাকাতে নীলা তাকাতে দেখলো টিকটিকি যেনো উড়াল দিয়ে ওর কাছেই আসবে নীলা ভয়ে লাফ দিলো আর নীলের কোলে বসে পড়লো আর ঘরে বিকট চিৎকার এর আওয়াজ।

নীল: টিকটিকি তো সাহস দেখিয়ে আসলো তুমি বিড়াল হয়ে গেলা কেনো?

নীলা: প্লিজ এইটাকে সরান আমি সব ধরনের পশুপাখি ভয় পাই।

নীল জোরে হাসতে লাগলো নীলা চোখ কুঁচকে বন্ধ করে রেখেছে টিকটিকি চলে গিয়েছে নীল হঠাৎ করে নীলার চেহেরার দিক তাকালো আর যেনো নীলের চোখ আটকে গেলো চুলগুলো সব নীলার মুখে এলোমেলো হয়ে পরেছে চোখ চেপে ঠোট কামড় দিয়ে রেখেছে এক অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে নীলের এই প্রথম মনে হয় কোনো মেয়েকে এতো কাছ থেকে অনুভব করছে নীল নীলার নিঃশ্বাস বুকের ধুকপুক আওয়াজ সব কিছু। সবই যেনো এক অন্যরকম অনুভুতি।

নীলা কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে এক চোখ বন্ধ রেখে আরেক চোখ খুললো দেখলো টিকটিকি ‌নেই নীলের দিকে তাকাতেই এমন চাহনি দেখে কেমন যেনো লাগলো নীলার এখন হুশ এলো সে নীলের কোলে দ্রুত গতিতে উঠে যেতে নিলেই নীলার চুল টান খেলো।

নীলার নড়ে যাওয়ার কারনে নীলের হুশ আসলো নীলা নীলের গলায় যে সানগ্লাস টা আছে সেদিক থেকে চুল ছাড়াতে লাগলো। নীল সানগ্লাস টা থেকে নীলার চুল খুলে নিলো খুলে নিলো আর নীলা দাড়িয়ে গেলো।

নীল:কি ম্যাম সত্যি কি টিকটিকির ভয় নাকি আমার কোলে উঠার ধান্দা।

নীলা:দেখুন খবরদার একদম বাজে বকবেন না আমার কোনো উদ্দেশ্য ই ছিলো না আপনার কোলে উঠার আল্লাহ সাক্ষি আছেন।

নীল আল্লাহর সাক্ষীর কথা শুনে আর কিছু বললো না নীলা মুখ ভেংচি কেটে ঘরে দৌড় দিলো।
।।

আব্বুর সাথে নীল অনেক কথা বললো এক প্রকার বেশ ভাব জমে গিয়েছে দু’জনের। মানিক নীলের আনা সামগ্ৰী গুলো দেখছিলো। হঠাৎ ই মানিক জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে নীলের দিকে একবার তাকালো আর একবার সামগ্ৰী গুলোর দিকে তাকালো হঠাৎ ই মানিক বলে উঠলো___

মানিক:নীল ভাইয়া!! কিছু মনে না করলে একটা কথা বলবো।

নীল:অবভিয়াসলি চ্যাম্প এন্ড লিসেন আমার সাথে কথা বলার জন্য আবার এতো পারমিশন লাগে না যা ইচ্ছা বলতে পারো লাইক আ বেস্ট বাড্ডি।

মানিক:ভাইয়া!! এইদিকে সবার জন্য জামা কাপড় আরো অনেক কিছু সবার জন্য টুকিটাকি বেশ ভালোই আছে কিন্তু এইসবের মধ্যে আমি নীলা আপুর একটা জিনিস ও পাই নি।

নীল চোখ বড় বড় করে মানিকের দিকে তাকালো। সামগ্ৰী গুলোর দিকে একবার তাকালো মাথা উঁচু করে তাকাতেই নীলার দিকে চোখ গেলো নীলা যেনো নিরবে নীল কেই দেখছিলো চোখে চোখ পড়তেই চোখ সরিয়ে নিলো নীলা আর মিহুর সাথে যেয়ে দুষ্টুমি শুরু করে দিয়েছে। মিহুর বিষয় টা মোটেও ভালো লাগে নি আচ্ছা এইটা যেহেতু মেঘের মা করেছে তাহলে কি উনি ইচ্ছা করে নীলার জন্য কিছু পাঠায় নি ? প্রশ্ন টা বারবার মনের মধ্যে কাড়া দিচ্ছে মিহুর।

আম্মু: আহ মানিক এইগুলো কেমন কথা।

মানিক: না মানে আম্মু সবার সামগ্ৰী আছে শুধু মাত্র নীলা আপু বাদে তাই আর কি।

নীলা: রিলেক্স ডাম্বো আমার বুঝি ড্রেস নেই? আলমারি টা খোল আলমারি খুললেই সব ড্রেস পরবে তোর বোনের এতো এতো ড্রেস।

মানিক: কিন্তু আপু ওগুলো তো…

মানিক কিছু বলতে যাবে তার আগেই নীলা চোখ গরম করে মানিকের দিকে তাকালো মানিক চুপসে গেলো নীলা আবারো হাসি মুখে নীলের দিকে তাকালো।

নীল মনে মনে হাজারো কথা নিজের সাথে নিজে বলছে “কি ভেবেছে এই মেয়ে আমি কিছু বুঝি না সবার সামনে দুষ্টুমি হাসি মজা ঠিকই করছে কিন্তু ওর হাসির মধ্যে স্পষ্ট ছাপা আছে ওর খারাপ লাগা টা” হঠাৎ নীলের ফোন আসাতেই তার ধ্যান কাটলো ফোন স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলো চাচি ফোন করেছে।

নীল: এক্সকিউজ মি!!!

নীল সবাই কে উদ্দেশ্য করে এই কথাটা বলে হাঁটতে হাঁটতে অন্যদিকে চলে গেলো___

চাচি: কি ব্যাপার নীল তুমি কোথায়?

নীল: চাচি এখনো ভাবির বাসায় উনারা বলছে সকালের নাস্তা করে যেতে।

চাচি: মানে কি এইসব এর তুমি জানো না আজ বাসায় কতো কাজ জলদি বাসায় আসো।

নীল: ঠিক আছে চাচি আমি আসছি। কিন্তু চাচি একটা কথা বলার ছিলো।

চাচি: বাসায় আসছো তো তখনি বলো।

নীল: না চাচি এইটা একটু ইম্পর্ট্যান্ট।

চাচি: কি হয়েছে বলো।

নীল: চাচি আপনি কি নীলার জন্য কিছু পাঠান নি।

চাচি: না কেনো?

নীল: কিন্তু ঐ ও তো এই বাসার ই মানুষ।

চাচি: বাসার মানুষ তো কি হয়েছে সবার থেকে আলাদা আর একটা কথা আমি চাই না ও আমাদের ফাংশন এ আসুক তাই ইচ্ছে করে।

নীল: ওহ। আচ্ছা চাচি রাখছি।

নীলের কেনো যেনো অনেক খারাপ লাগছে। নীল সবার সামনে যেয়ে বললো__

নীল: আন্টি আঙ্কেল আমি আজ তাহলে আসি চাচি ফোন করেছিলো বললো বাসায় নাকি অনেক কাজ

আম্মু: সে কি আমি কতো কষ্ট করে কতো কিছু রান্না করলাম একটু খেয়ে যাও ‌

নীলা:থাক আপনি যান আপনার টা আমি খাবো ইয়াম ইয়াম?

নীল হাসবে নাকি বুঝতে পারছে না তবুও ও হাসি আটকে রাখতে পারলো না হেসেই দিলো [“ড্রামা কুইন”]

নীলা নিশ্চুপে নীলের দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে বললো [“মিস্টার হ্যান্ডসাম”]

নীল সবাইকে বিদায় দিয়ে বাসায় চলে আসলো। মিহু বলে উঠলো___

মিহু: আমি যাবো না।

নীলা: মানে কি কেনো জিজুর বার্থডে তো কি হয়েছে আজকের ওকেশন এ তোকেও উনাদের অন দরকার।

মিহু: কিন্তু আমার দরকার নেই।

নীলা:আরে কেনো এতো পাগলামো করছিস বল তো আচ্ছা আমার কি কম ড্রেস আছে।

মিহু:বিষয় টা ড্রেস দিয়ে না নীলা কিন্তু এইটা যাস্ট একটু অপমান জনক এইটা বুঝছিস না।

নীলা: উফফফ তুই যদি অপমান বলে ভাবিস তাহলে তোর কাছে অপমান লাগবে আর যদি তুই নরমাল নেস তাহলে কিছুই না।

মিহু: উফফ নীলা আমাকে কিছু বুঝাতে আসবি না তো।

নীলা: কাকে বুঝাবো তোকে? আমার বয়েই গিয়েছে হুহ।

মিহু: ঠিক আছে আমি যাবো কিন্তু একটা শর্তে।

নীলা: কিসের শর্ত?

মিহু: আমার ড্রেস তোকে পড়তে হবে।

।❣Drama_Queen_VS_Mr_Handsome❣
#Writer_Neela
#Part_10
.
.
মিহুকে তো অনেক কষ্টে ম্যানেজ করেছে নীলা যে ওর ড্রেস ও পরবে না সন্ধ্যা হয়ে এসেছে নীলা না গেলে মিহু ও যাবে না তাই বাধ্যতামূলক রেডি হতে এসেছে ঠিকই কিন্তু আলমারি খুলে দাড়িয়ে আছে। অমন বাড়ির অনুষ্ঠানে যাওয়ার মতো তার কোনো সুন্দর ড্রেস নেই। কি করবে ভেবে পাচ্ছে না নীলা। বিছানায় বসে পরলো চুল গুলো কানের পিছনে গুঁজে আবার দুহাত দিয়ে মুখ ঢেকে বসে রইলো।

হঠাৎ ই বেলের শব্দে নীলার ধ্যান ভাঙলো কেউ ই দরজা খুলতে যাচ্ছে না সবাই রেডি হওয়ায় ব্যস্ত তাই নিজেই যেয়ে দরজা খুলে দাঁড়ালো___

কুরিয়ার ম্যান: এক্সকিউজ মি আপু!! নীলা আছেন?

নীলা:জি আমিই নীলা বলুন।

কুরিয়ার ম্যান: ম্যাম আপনার জন্য এই পার্সেল টা।

নীলা:সরি আমি কিছু অর্ডার করি নি।

কুরিয়ার ম্যান: কিন্তু বাসা ঠিকানা নাম সবই আপনার ছিলো।

নীলা:দেখুন আপনার হয়তো কোনো মিস্টেক হচ্ছে।

কুরিয়ার ম্যান:ওয়েট আমি একটু চেইক করে দেখছি।

নীলা চুপ করে দাঁড়িয়ে আশেপাশে তাকাতে লাগলো হঠাৎ ই আবার কুরিয়ার ম্যান বলে উঠলো__

কুরিয়ার ম্যান: ওহ সরি ম্যাম এইটা এই বাসা থেকে অর্ডার করা হয় নি কিন্তু এইটা আপনার জন্য গিফট।

নীলা কিছু টা অবাক হলো চোখ ছোট ছোট করে আস্তে করে বললো “আমার গিফট? ইন্টারেস্টিং”

নীলা; জি ভাইয়া কোথা থেকে এসেছে বললে ভালো হতো

কুরিয়ার ম্যান:সরি ম্যাম যে আপনার জন্য গিফট পাঠিয়েছে তার নিষেধ আছে।

নীলা: ওহ ধন্যবাদ।

নীলা প্যাকেট টা হাতে নিয়ে পেপার এ সাইন করে নিজের রুমে চলে গেলো। গিয়ে দেখলো মিহু মাত্র শাওয়ার নিয়ে বেরিয়েছে।

মিহু:কিরে এইটা কি?

নীলা: ডোন্ট নো কুরিয়ার ম্যান আসলো বললো আমার নামে গিফট।

মিহু:খুলে দেখতো এইটা কি।

নীলা আস্তে আস্তে প্যাকেট টা খুলে দেখলো রেডিমেড শাড়ি। অর্থাৎ শাড়ি টা ড্রেস সিস্টেম এর পড়লে পুরো শাড়ির মতোই লাগবে কিন্তু আসলে শাড়ি না। শাড়ি কালো রঙের নীলা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে শাড়িটার দিকে। এই কালারের এই শাড়িটা ই সে এতো দিন তার বাবার কাছে চাচ্ছিলো সে নিয়ে এক প্রকার লাফিয়ে উঠলো।

মিহু: ওয়াও নীলা শাড়ি টা যাস্ট আমেজিং

নীলা: উফফ কে দিলো শাড়ি টা বুঝে উঠতে পারছি না কোনো ক্লু পাওয়া যেতো তাকে একটা বড়সড় থ্যাংকস দিতাম।

মিহু চুল হাচরাতে হঠাৎ নিচে ফ্লোরে পরে থাকা কাগজের দিক নজর গেলো। কাগজ টা উঠিয়ে নীলাকে উদ্দেশ্য করে বললো___

মিহু: নীলা? এই কাগজ টা কিসের রে এই ড্রেসের প্যাকেট থেকে পড়লো না তো?

নীলা মুচকি হেসে কাগজ টা হাতে নিয়ে খুললো__”কি পছন্দ হয়েছো তো ড্রামা কুইন? ইতি তোমার সালমান খান”

নীলা এইবার লাফাতে লাফাতে পুরো রুমে দৌড়াতে শুরু করলো।

মিহু:আরে কি হয়েছে এইভাবে লাফাচ্ছিস কেনো?

নীলা: মিহুউউউউ তুই বিলিভ করবি না এইটা আমাকে সালমান খান গিফট করেছে।

মিহু: তোর মাথায় তার ছিড়া ছিলো জানতাম বাট সবগুলোই যে ছিড়া সেটা জানতাম না।

নীলা: আরেএএএ সত্যি বলছি চিঠি টা পড়। দেখ আমার সাল্লু কতো সুন্দর করে লিখে বলেছে ইতি তোমার সালমান খান।

মিহু: উফফ চুপ কর তো রেডি হ আমাকে ও রেডি হতে দে।

নীলা মুখ ফুলিয়ে বসে পরলো “উফফফ কেউ আমার কথা বিশ্বাস করে না মিহু ও না কেমন লাগে? যাই হোক সালমান খান আমি তো জানি তুমি আমাকে গিফট করেছো কেউ আমাকে বিশ্বাস না করলে কি হয়েছে আমি তোমাকে বিশ্বাস করি আর এইটাও জানি তুমি এখনো আমার জন্য অবিবাহিত”।

মিহু: যদি মনে মনে ভাবিস না যে সালমান খান এখনো তোর জন্য অবিবাহিত তাহলে বলে দেই তুই সালমান খানের মেয়ের বয়সী। আর সালমান খানের চয়েজ এ তুই জীবনেও আসবি না।

নীলা: কেনো আমি কি কোনো দিক দিয়ে কম নাকি সালমান যে সবসময় ক্যাট ক্যাট মানে বিড়াল থুক্কু ক্যাটরিনা করে আমি কি থেকে কোনো কম নাকি।

মিহু: কিন্তু সালমান এর বয়সের সাথে ক্যাটরিনা কাইফ এর বয়স ম্যাচ খায় তোর বয়স তো মাত্র ২০ এ পড়লো। সালমান খান তোকে দেখেই এক কথায় বলবে “আরে আমার মেয়ে না?”

নীলা: ধ্যাত ভাল্লাগে না।
।।

সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে নীল সবার সাথে আলাপ করছে হাতে ওয়াইনের গ্লাস কথা বলছে আর বারবার দরজার দিকে তাকাচ্ছে।

মেঘ:কি ব্যাপার বারবার দরজার দিকে তাকিয়ে আছিস কেনো কেউ আসবে নাকি।

মেঘ কথাটা বলেই এক গ্লাসে এক চুমুক দিয়ে সব খেয়ে শেষ করলো আর ওয়েটার কে ডেকে গ্লাস টা ট্রে তে রেখে আরেক গ্লাস নিলো।

নীল: আরে ভাবি আসবে তো সেইজন্য ওয়েট করছিলাম।

মেঘ: আমার বিয়ে হতে না হতেই ওকে ভাবি বলা শুরু করেছিস আর এতো ভাবির পাগল তো তুই ই বিয়ে করে ফেল না মিহুকে।

নীল অপ্রস্তুত হয়ে পিছনে তাকাচ্ছিলো আর ইশারায় বারবার মেঘ কে চুপ করতে বলছিলো কিন্তু কে শোনে কার কথা মেঘ তার মতো বলেই যাচ্ছে হঠাৎ মেঘ লক্ষ্য করলো নীল বারবার অপ্রস্তুত হয়ে পিছনে তাকাচ্ছে তাই মেঘ ও পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলো মিহু কে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে মেয়েটা মিষ্টি কালারের একটা লেহেঙ্গা পড়নে চুল গুলো বাকা সিঁথি করে ফুলিয়ে নিচে রিং করা আর ফেইস এ পিংক হাইলাইটার এর মেক আপ।

মেঘ মিহুর দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে মিহুর দিকে আস্তে আস্তে আগালো আর মিহুর চারপাশে আস্তে আস্তে হেঁটে মিহুকে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো। হঠাৎ ই মেঘ মিহুর কানে ফিসফিসিয়ে বললো___

মেঘ: বিউটিফুল!!!

মিহু ভাবতেও পারে নি মেঘ তাকে দেখে এই কথা বলবে মুচকি হেসে মেঘের দিকে তাকালো মিহু। মেঘ মিহুর দিকে নম্র চোখে তাকিয়ে বললো__

মেঘ: সেদিনের ব্যবহার এর জন্য দুঃখিত

মিহু: ইট’স ওকে।

মেঘ: আচ্ছা তুমি কি জানো ওয়াইন যদি কোনো ড্রেসে পরে সে দাগ উঠতে চায় না।

মিহু: বুঝলাম না ঠিক।

মেঘ: ঠিক আছে আগে বুঝো তারপর অ্যান্সার দিও অপেক্ষায় থাকবো।

মিহু কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই মেঘের হাতের ওয়াইনটা মিহুর ড্রেসে ঢেলে দিলো মিহু রাগি চোখে ফোপাতে ফোপাতে মেঘের দিকে তাকালো মেঘ ডোন্ট কেয়ার একটা ভাব নিয়ে ওদিক থেকে চলে গেলো।

মিহুর প্রচুর পরিমাণে রাগ হচ্ছে কি করবে ভেবে পাচ্ছে না অতঃপর একটা ওয়েটার কে ডাক দিলো___

মিহু:এক্সকিউজ মি!!

ওয়েটার: ইয়েস ম্যাম হাউ ক্যান আই হেল্প ইউ?

মিহু: ক্যান ইউ প্লিজ টেল মি হোয়াইর ইজ ওয়াশরুম।

ওয়েটার: ওহ সিউর ম্যাম। ইউর ফার্স্ট টারন লেফ্ট দেন রাইট

মিহু: ওহ থ্যাংক ইয়ু সো মাচ।

মিহু আর অপেক্ষা করলো না দৌড়ে চলে গেলো। ওয়াশ রুমে যেয়ে দ্রুতগতিতে তার ড্রেস পরিষ্কার করতে লাগলো মিহুর এই ড্রেস টা খুব পছন্দ হয়েছিলো প্রথম দেখাতেই ফেভারিট হয়ে উঠেছিলো ভেবেছিলো সবসময় আগলে রাখবে ড্রেস টাকে কিন্তু সেটা আর হতে দিলো না দাগ ভরিয়ে দিলো যতো কিছু ই করছে না কেনো কোনোরকম ই দাগ টা উঠছে না এইবার মিহুর চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেল।
।।

এইদিকে নীল কতোসময় ধরে গেইটের দিকে তাকিয়ে আছে নীলাকে কোনো রকমই দেখতে পাচ্ছে না হঠাৎই দেখলো মানিক চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে ভিতরে ঢুকছে।

নীল: কি হয়েছে চ্যাম্প।

মানিক: আর বলো না সময় পেলেই আমাকে পচাতে থাকে মারতে থাকে এই মাত্র নীলা আপু আমার চুল টান দিয়ে হেয়ার স্টাইল নষ্ট করে দিলো তুমি জানো কতো সুন্দর রক স্টাইল দিয়েছিলাম।

নীল: আহারে মিহু তো সেই কখন এলো তোমরা এতো লেইট এ।

মানিক: আম্মু,আব্বু আর মিহু আপু একটা ট্যাক্সি ভাড়া করে এনেছে আরেকটা ট্যাক্সি ভাড়া করে আমি আর নীলা আপু এসেছি আর আমাদের সঙ্গি ছিলো মেঘ ভাইয়ার বার্থডে গিফট।

নীল: ওহ সো চ্যাম্প তোমার কইতরি বোন টা কই।

মানিক: এতো সোজা নাকি আমার হেয়ার স্টাইল নষ্ট করেছে বলে ওরটা ও নষ্ট ও করে ফেলেছি কিন্তু অবশ্য ওর সিথিটা সোজা থেকে বাকা হয়ে গিয়েছে এখন সেটা নিয়ে চিল্লাচ্ছে।

নীল: ওকে তুমি যাও আমি কইতরি কে নিয়ে আসি।

মানিক: তোমাকে মাশা আল্লাহ অনেক সুন্দর লাগছে তুমি ওদিকে যেও না তোমার অবস্থা ও নাজেহাল করে দিবে।

নীল হেসে দিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো আশেপাশে নীলাকে খুজতে লাগলো নীলাকে দেখে নীলের মুখ দিয়ে একটা শব্দই বের হলো___

নীল: হায়েএএ।

নীলা বকবক করে জোরে জোরে পা ফালিয়ে সিঁড়ি তে উঠছে হঠাৎ চোখ গেলো পাশে তাকিয়ে দেখলো নীল___

নীলা: [হায় মে মার যাওয়া]

নীল: হেই কেমন আছো?

নীলা: আলহামদুলিল্লাহ।

নীল: বাই দা ওয়ে লুকিং মাশা আল্লাহ [চোখ টিপ]

নীলা লজ্জা পেয়ে নীলের পাশ দিয়ে হালকা হেসে ভিতরে ঢুকে পরলো।
।।

মিহু ওয়েটার কে ডাক দিয়ে একটা ওয়াইনের গ্লাস হাতে নিলো। নরমালি হেটে মেঘের পিছনে যেয়ে দাঁড়ালো। মেঘ অফিসের যেইসব ক্লাইন্টদের সাথে কথা বলছিলো তারা মিহুকে দেখে হালকা হেসে “এক্সকিউজ মি” বলে সেদিক থেকে চলে গেলো মেঘ বিষয় টা বুঝতে না পেরে পিছনে ফিরে একটু চমকে গেলো তারপর একটু দূরে সরে দাঁড়ালো___

মেঘ: হেই!! বাই দা ওয়ে অ্যান্সার টা পেয়েছো?

মিহু হাসি মুখে মেঘের দিকে চোখ তুলে তাকালো তারপর হালকা হেসে দিয়ে উত্তর দিলো___

মিহু: হুম পেয়েছি ওয়াইন ড্রেসে পরলে দাগ উঠে না।

মেঘ: গুড আর প্রুভ এর জন্য তোমার ড্রেস টা তাই না?

মিহু: যা ভাবেন।‌ ওহ গড হ্যাপি বার্থডে।

মেঘ কিছু বলার আগেই মিহু ওয়াইনটা মেঘের মুখে ছুড়ে মারলো মেঘ রাগি চোখে মিহুর দিকে তাকালো মিহু হেসে ঢুলে দাঁড়ালো___

মিহু: আপনার গিফট + একটা প্রশ্ন নিয়ে হাজির হয়েছি ওয়াইনের গ্লাস মুখে দিলে কি তার রঙ উঠে যায়। কুয়েশ্চেন এর অ্যান্স টা খুব জলদি দিবেন আশা করছি।

মেঘ আর মিহু কে এমন অবস্থায় কেউ ই দেখে নি কারন তারা স্টেজের পিছনে। মেঘের প্রচন্ড রাগ হচ্ছে যেমন সহজ সরল ভেবেছিলো মেয়েটাকে ততোটাও সহজ সরল না মেয়েটা।

চলবে ???

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here